কিভাবে দ্রুত চাকরি পাওয়া যায় – 6 Steps to Follow

কিছু টেকনিক অবলম্বন করলে হয়তো অন্যদের চেয়ে আপনি চাকরির বাজারে এগিয়ে থাকবেন।

কিভাবে দ্রুত চাকরি পাওয়া যায় এই প্রশ্ন বাংলাদেশের 90% শিক্ষার্থীদের মাথায় সব সময় ঘুরঘুর করতে থাকে। অবশ্যই এটা অস্বাভাবিক কোন কিছু নয় কারণ আমাদের দেশের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের টার্গেট থাকে পড়াশোনা শেষ করে ভালো একটা চাকরি পাওয়া। যার দ্বারা তারা তাদের পরিবারকে সাপোর্ট করতে পারবে এবং নিজে একটা ভালো জীবন যাপন করতে পারবে।

অনেকেই মনে করে থাকেন যে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভালো একটা চাকরি পাওয়া খুব সহজ নয়। কারণ আমাদের দেশের প্রত্যেকটি সেক্টরে ঘুষ ও দুর্নীতির প্রভাবে মেধাবী শিক্ষার্থীরা উঠে দাঁড়াতেই পারেনা। এই ধারণা অনেকটা সত্যি হলেও সম্পূর্ণরূপে সত্য নয়। কারণ 100 জন নিয়োগপ্রাপ্ত যদি হয়ে থাকে তাহলে সবাই তো আর ঘুষ অথবা দুর্নীতি করে হয় না। এদের মধ্যে অনেকেই থাকেন নিজের মেধা এবং চেষ্টার জোরে নিজের জায়গা তৈরি করে নিয়েছেন।

সকল এনজিও চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

তবে একথা সত্যি যে দেশের যেকোনো উচ্চ পর্যায়ে যদি আপনার পরিচিত অথবা কাছের কোনো আত্মীয়-স্বজন থেকে থাকেন তাহলে বর্তমান প্রেক্ষাপটে ভালো একটা চাকরি পাওয়া আপনার জন্য অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। তাই বলে যাদের লোকজন বা আত্মীয় স্বজন উচ্চপর্যায়ে নেই তাদের কি চাকরি হচ্ছে না?

তাহলে কিভাবে দ্রুত চাকরি পাওয়া যায়?

অবশ্যই হচ্ছে। এজন্য দরকার আপনার এক নিষ্ঠ পড়াশোনা এবং কিছু টেকনিক। সেইসাথে ভাগ্য যদি আপনাকে সহায়তা করে তাহলে অনেক আগেই হয়তো চাকরি নামক এই সোনার হরিণ আপনি হাতে পেয়ে যেতে পারেন।

সকল সরকারি চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

এখন কথা হল যে কিভাবে দ্রুত চাকরি পাওয়া যায়। আসলে কোন কিছুই খুব বেশি দ্রুত করলে সেটা ভালো ফলাফল বয়ে আনে না। তবে কিছু টেকনিক অবলম্বন করলে হয়তো অন্যদের চেয়ে আপনি চাকরির বাজারে এগিয়ে থাকবেন। এটা হতে পারে হয়তো আপনি তাদের কিছু সময় আগেই চাকরি পেতে পারেন।

তাহলে কিভাবে দ্রুত চাকরি পাওয়া যায়
  • টার্গেট ঠিক করা: দ্রুত চাকরি পেতে হলে প্রথম আপনাকে যে কাজটি করতে হবে সেটা হল আপনার টার্গেট ফিক্স করা। বিভিন্ন উৎস ঘাটাঘাটি করে এবং বর্তমান বাজার সম্পর্কে ধারণা নিয়ে আপনি কোন ধরনের চাকরিতে নিয়োগ পেতে চান সেটা আগে নির্ধারণ করুন। আপনার টার্গেট নির্ধারণ আপনাকে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে অনেক বেশি সহায়তা করবে।
  • পরিকল্পনা করা: আপনার টার্গেট নির্ধারণ করার পর পরিকল্পনা করুন যে কিভাবে এগোলে আপনি সবচেয়ে দ্রুত এগোতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন লেখকদের বই পড়ার পাশাপাশি পরিচিত বড় ভাইদের সাজেশন নিতে পারেন। তাছাড়া আপনার পরিকল্পনায় সবসময় প্ল্যান-বি হাতে রেখে দেবেন। কথার কথা যদি বিসিএস আপনার টার্গেট হয় তাহলে অবশ্যই এর পাশাপাশি অন্যান্য ছোটখাটো চাকরীর অপশন নিজের হাতে রেখে এগিয়ে যাবেন। হঠাৎ যদি আপনার প্রথম টার্গেট মিস হয়ে যায় তাহলে জীবনটা যেন রসাতলে না যায় সে জন্য পরিকল্পনায় অবশ্যই প্ল্যান-বি থাকা অত্যন্ত জরুরী।
  • পড়াশোনা: ভালো চাকরি বলতে আমাদের দেশে বর্তমানে বিসিএস ব্যাংক এবং আরো কিছু উচ্চ পর্যায়ের চাকরি গুলো কে বোঝানো হয়ে থাকে। তার মধ্যে রয়েছে স্কুল-কলেজের শিক্ষক নিবন্ধন বিসিএস নন ক্যাডার ইত্যাদি। আরে সকল চাকরি পাবার একমাত্র উপায় হলো পড়াশোনা। আপনি যদি মনে করেন যে ভাগ্যের ঘাড়ে পা রেখে আপনি যে সকল চাকরি পেতে পারেন তাহলে সেটা হবে আপনার সবচেয়ে বড় বোকামি। 
  • এখানে লক্ষ লক্ষ চাকুরী প্রার্থীদের মধ্যে পরীক্ষা দিয়ে নিজের মেধা যাচাই পূর্বক আপনাকে সামনের দিকে বের হয়ে আসতে হবে। মনে রাখবেন আপনার মত লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীরা পড়াশুনা করছে এই একটি চাকরি পাবার আশায়। এই পরিস্থিতিতে আপনি যদি তাদের থেকে এগিয়ে থাকতে চান তাহলে কি পরিমান পড়াশোনা আপনাকে করতে হবে সেটা আপনি নিজেই নির্ধারণ করুন।
  • সাক্ষাৎকার সম্পর্কে ধারণা রাখুন: চাকরির পরীক্ষাগুলো নেওয়া হয় মূলত আপনার পরিশ্রমের মাপকাঠি হিসেবে। এখানে মেধা তেমন একটা কদর করা হয় না বললেই চলে। আপনি যত বেশি পড়াশোনা এবং পরিশ্রম করবেন চাকরির পরীক্ষাগুলো তে এগিয়ে থাকার সম্ভাবনা ততই বেশি। কিন্তু চাকরির সাক্ষাৎকার গুলো নেওয়া হয় আপনার মেধা মননশীলতা সত্তা আচার-আচরণ আপনার দৃষ্টিভঙ্গি এগুলো পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে। তাই সাক্ষাৎকার গুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখুন। এতে করে আপনি যেকোন সাক্ষাৎকারে গিয়ে নিজেকে উপযুক্ত হিসেবে বোর্ড মেম্বার দের সামনে উপস্থাপন করতে সক্ষম হবেন। আর একটি সফল সাক্ষাৎকার একজন চাকরিপ্রার্থীর সফল হবার সম্ভাবনা বহু অংশে বাড়িয়ে দেয়। 
  • ধৈর্য ধারণ করুন: চাকরি পেতে হলে ধৈর্যের বিকল্প কোনো উপায় নেই। প্রচন্ড ধৈর্য ধারণ করে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে। এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে আমাদের দেশে যারা চাকরির বয়স শেষ হওয়া পর্যন্ত প্রচণ্ড ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন। আর ফলাফল ও মিলেছে শেষ পর্যন্ত গিয়ে। 
  • ফাঁকি দেওয়া যাবে না: যতটুকু পড়াশোনা করবেন একেবারে মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করার চেষ্টা করবেন। পড়ার টেবিলে বসে যদি আপনি আপনার কাজে ফাঁকি দেন তাহলে সেই ফাকির মূল্য আপনাকে পরিশোধ করতে হবে। তাই নিজের কাজে ফাঁকি না দিয়ে একেবারে নিষ্ঠার সাথে পড়াশোনা চালিয়ে যান। 

কিভাবে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান অথবা কোম্পানির চাকরি দ্রুত পাবেন?

বিভিন্ন প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান নয় অথবা কোম্পানির চাকরি পেতে হলে চাকরির পড়াশোনার খুব একটা প্রয়োজন হয় না বললেই চলে। কোম্পানি অথবা এনজিও চাকরি গুলোতে সাধারণত দেখা হয় যে আপনি কতটা কঠোর পরিশ্রম করার পর মানসিকতা পোষণ করেন। তাছাড়া কিছু প্রতিষ্ঠান শিক্ষাগত যোগ্যতা টা কেও প্রধান্য দেয়া হয় প্রথমত। 

যেহেতু কোম্পানি এবং এনজিওর চাকরীর গুলোতে সরাসরি সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হয় সে ক্ষেত্রে আপনি যদি সফলভাবে সাক্ষাতকারে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারেন তাহলে খুব দ্রুতই আপনি ভালো একটা কোম্পানি অথবা এনজিও চাকরি পেতে পারেন। 

চাকরি পাবার পর যদি দ্রুত নিজের পজিশন উপরের দিকে তুলতে চান তাহলে সততার সাথে কোম্পানি অথবা এনজিওর জন্য ধৈর্য সহকারে কাজ করে যাওয়ার বিকল্প কোনো পথ নেই। 

কেন কোম্পানির চাকরিতে প্রমোশন পাচ্ছেন না?

এর অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। যেমন আপনি হয়তো ভালোভাবে কোম্পানির কাজগুলো করছেন না অথবা আপনার কাজে সততার ঘাটতি রয়েছে। অথবা এমনও হতে পারে যে আপনি কাজ করছেন ঠিক হয় কিন্তু সেটা কোম্পানির কাছে সঠিক পদ্ধতিতে তুলে ধরতে পারছেন না। 

অনেকে আবার একটা কোম্পানিতে কয়েক মাস চাকরি করার পর সেটা ছেড়ে দিয়ে আরেকটা কোম্পানিতে যুক্ত হন। এরকম হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পদোন্নতি পাওয়া আপনার জন্য যে কোন কোম্পানিতে কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। 

সুতরাং কিভাবে দ্রুত চাকরি পাবেন সেটা আশা করি সকলে বুঝতে পেরেছেন। আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। নিয়মিত চাকরির আপডেট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। 

শেয়ার করে রাখুন

Leave a Reply